শিবচরে ডিভোর্সী স্ত্রীকে ফিরে পেতে শ্যালককে অপহরন, ৫ দিন পর উদ্ধার, আটক-২, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি

শিবচর বার্তা ডেক্স :
প্রায় ৬ মাস আগে ডিভোর্স হওয়া স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্ত্রীর ফুফাতো ভাইকে শিবচর থেকে অপহরন করে দুলাভাই। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ অপহরনের ৫ দিন পর কালকিনি থেকে শ্যালককে উদ্ধার করেছে। এসময় আটককৃত ২ অপহরনকারী শুক্রবার মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, গত প্রায় ৯ বছর আগে শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের সামাদ খার কান্দি গ্রামের কলম ঢালীর ভাগ্নি তাসলিমার সাথে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দক্ষিন বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের খাসেরহাট গ্রামের মো: মজিবুর বেপারীর ছেলে মো: মিলন বেপারীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই মনমালিন্য হতো। এরই প্রেক্ষিতে গত প্রায় ৬ মাস আগে মিলন বেপারীকে ডিভোর্স দেয় তাসলিমা। কিন্তু এটা মেনে নিতে পারেনি মিলন। স্ত্রীকে ফিরে পেতে তাই প্রায়ই মিলন ফোন করে তাসলিমাকে বিরক্ত করতো। গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি পুরাতন ঘাটের গোলচত্বর এলাকায় তাসলিমার ফুফাতো ভাই নবীন ঢালীকে (২৭) পেয়ে কথা আছে বলে মিলন বেপারী, নয়ন সরদার, শাকিল ফকির, মাসুম সরদার ও ইব্রাহিম সরদার মোটরসাইকেলে করে নবীনকে কালকিনির খাসেরহাট এলাকায় নিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রাখে। এদিকে ছেলে নিখোঁজ হওয়ায় নবীনের বাবা কলম ঢালী ১৮ এপ্রিল শিবচর থানায় একটি জিডি করেন। ১৯ এপ্রিল সকালে মিলন বেপারী তাসলিমাকে মোবাইলে ফোন করে জানায় নবীনকে সে অপহরন করেছে। তাসলিমা তার কাছে ফিরে গেলে অথবা ৮ লাখ টাকা দিলে তবেই সে নবীনকে ছেড়ে দিবে। তাসলিমার কাছে এ কথা শুনে কলম ঢালী পুলিশকে জানালে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নবীনকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ কালকিনির আউলিয়ারচর গ্রাম থেকে অপহরনকারী নয়ন সরদার (২৫) ও শাকিল ফকিরকে (২২) গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে নাগেরপাড় এলাকা থেকে নয়ন ঢালীকে উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার গ্রেফতার আসামীদের মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে বিচারকের নিকট অপহরনের অপরাধ স্বীকার করে আসামীরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
অপহরনের শিকার নয়ন ঢালী বলেন, আমাকে কথা আছে বলে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে কালকিনির একটি বাড়িতে আটকে রেখে মারধর করেছে। তাসলিমা ফিরে না গেলে আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখাতো।
তাসলিমা বলেন, মিলন খুব খারাপ মানুষ তাই ওর সাথে আমার সংসার টিকেনি। আমি ডিভোর্স দেওয়ার পরও আমাকে ফোন করে হুমকি দিতো। সর্বশেষ আমার ফুফাতো ভাইকে অপহরন করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে ফিরে যেতে বলে নয়ত ৮ লাখ টাকা দাবী করে।
কলম ঢালী বলেন, আমার ছেলেকে যারা অপহরন করে মারধর করেছে তাদের সবাইকে যেন পুলিশ গ্রেফতার করে আমি এটাই চাই।
শিবচর থানার সেকেন্ড অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে তারা অপহরনের অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিরাজুল ইসলাম বলেন, অপহরনের ঘটনায় বাকি আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে