প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় মাদারীপুরে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর শরীরে পেট্রোল নিক্ষেপ

শিবচর বার্তা ডেক্স :
মাদারীপুরের রাজৈরে ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। রোববার(১৯ নভেম্বর) সকালে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় একই শ্রেনির দুই বখাটে সহপাঠি ও তাদের সঙ্গীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। অভিযুক্ত জয় ও দিগন্ত আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বড়খোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও তাদের বাড়ি বড়খোলা গ্রামে। ঘটনার পর পলাতক রয়েছে দুইজনই।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে মাদারীপুরের রাজৈরের আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বড়খোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে আলাদাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল একই শ্রেণির দিগন্ত রায় ও জয় বিশ্বাস। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে দিগন্ত ও জয়। রোববার সকালে ভাইয়ের সাথে হেঁটে বিদ্যালয়ে আসছিল ওই শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের কাছে আসলে ইজিবাইকে আসা দিগন্ত, জয় ও তাদের সহযোগিরা শিক্ষার্থীকে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের সাথে থাকা পেট্রোল ওই শিক্ষার্থীর শরীরে ঢেলে দেয়। পরে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বখাটেরা।
এসময় ভাই ও বোনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হয়। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেও কাটেনি আতঙ্ক।
ওই শিক্ষার্থী জানায়, ‘বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতো দিগন্ত ও জয়। প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় ওরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি ওদের শাস্তি চাই।
কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘ইউনিয়নের কোথাও ইভটিজিংকারীদের জায়গা নেই। ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনার বিচার চাই। অপরাধীদের আইনের হাতে তুলে দিতে আমরা সবাই একযোগে কাজ করছি।’
আড়ুয়াকান্দি নটাখোলা বদখোলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক স্বপন ঠাকুর বলেন, ‘বিষয়টিকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। অল্পের জন্য মেয়েটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচেছে। আমরা সবাই এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
রাজৈরের কদমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. লোকমান মিয়া জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। পরে সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মেয়েটিকে উত্যক্ত করতো একই শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী। মূলত প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় এই ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘এরই মধ্যে থানা পুলিশ ও কদমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বলা হয়েছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এই ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’