মাদারীপুরে নির্বাচনী সহিংসতায় আতঙ্কে বৃদ্ধের মৃত্যু, আহত-৫০, প্রার্থীর বাড়িঘর ভাংচুর

মাদারীপুর প্রতিনিধি :
মাদারীপুরের নির্বাচন পরবর্তী পৃথক ৩ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০জন আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িসহ ১০বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাট ও ২ ঘরে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় আতঙ্কে ষ্ট্রোক করে নূর ইসলাম (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ও ইশিবপুর ইউনিয়নে এসব ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, রবিবার চতুর্থ ধাপে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ৬ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে জয় পরাজয়কে কেন্দ্র করে পাইকপাড়া ও ইশিবপুর ইউনিয়নে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রবিবার রাতে উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চরকাশিমপুর এলাকায় বিজয়ী মেম্বর ফজলুল হক মুন্সীর সাথে পরাজিত মেম্বর প্রার্থী শুকুর আলীর সমর্থকদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে সোমবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের বৈরাগীর বাজারে আসাদ নামে এক যুবককে মারধর করে শুকুর আলীর লোকজন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মশিউর রহমান মুন্না খলিফা ফজলুল হক মুন্সীকে এবং অপর পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন মিয়া শুকুর আলীকে সমর্থন দেয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। আহতদের রাজৈর উপজেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে নুর ইসলাম নামে এক বৃদ্ধ ষ্ট্রোক করে। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নুর ইসলাম শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। সংঘর্ষ চলাকালে চেয়ারম্যান প্রার্থী মশিউর রহমান মুন্নার বাড়িসহ উভয় পক্ষের ১০ বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও ২ ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ মশিউর রহমান মুন্না খলিফাদের বাড়িতে লাটিচার্জ করে উপস্থিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার সময় শত শত নারী পুরুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মশিউর রহমান মুন্না খলিফা নিজে উপস্থিত থেকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন।
অপরদিকে একই দিন ইশিবপুর ইউনিয়নে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাসান ও বেল্লালের সমর্থকদের মধ্যে এবং খলিল ও আরিফের সমর্থকদের মধ্যে পৃথক দুটি সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে মেহেদীসহ কমপক্ষে ২০জন আহত হয়। গুরুতর আহত রাজিব মাতুব্বর, মান্নান চৌধুরী, আসিফ, ইব্রাহিম, হানিফকে রাজৈর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
রাজৈর থানার ওসি শেখ সাদিক জানান, “পাইকপাড়া ইউনিয়নে ৬নং ওয়ার্ডে দুই মেম্বর প্রার্থীর মধ্যে জয়-পরাজয় নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এলাকায় বিজিবির টহল ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”