দমকা হাওয়ায় ভেঙ্গে গেল মাদারীপুরে নবনির্মিত সরকারি সমন্বিত ভবনের জানালা: তদন্ত কমিটি গঠন

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক দশ তলা সরকারি সমন্বিত অফিস ভবন চালু হওয়ার দুই মাস পেরোতেই সামান্য দমকা হাওয়ায় একটি ইউনিটের ২৪টি জানালা ভেঙ্গে গিয়েছে। এ ঘটনায় মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়। সোমবার তদন্ত কমিটির বিষয়টি জানান জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন।
গেলো শুক্রবার ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে সামান্য ঝড়ো বাতাসে ১০ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলার পূর্ব পাশের ব্লকের তিনটি রুমের পূর্ব পাশের জানালা ভেঙে পড়ে। এ সময় এই কক্ষগুলোতে থাকা মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের মাদারীপুর জেলা শাখার কার্যালয়ের কক্ষের কম্পিউটার, ফটোকপির মেশিনসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স মালামালের ক্ষতি হয়।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘কারো কাজে গাফলতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্যে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাদারীপুরের উপ-পরিচালক আজাহারুল ইসলামকে প্রধান করে আরো তিন জন সদস্য নেয়া হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন মাদারীপুরের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার, গর্ণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম ও মাদারীপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ আবুল কালাম। এরা আগামী পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দালিখ করবেন। তারপরে আইনগত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগে তার দোষ বা কেন ঘটলো এসব নিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভবনে থাকা একটি দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সামান্য বাতাসেই জানালা ভেঙে গেছে। সামনে আরো বেশি ঝড় হলে আমাদের জন্য খুব বিপদজনক। তাছাড়া জানালার গ্রীল গুলো ও হালকা।’
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাদারীপুর জেলা সহকারী পরিচালক মুয়িত উদ্দিন মোল্লা বলেন, কয়েক দিন আগে দমকা হাওয়া প্রবাহিত হয়েছিলো। সেখানে সমন্বিত সরকারি ভবনের ষষ্ঠ তলার পূর্বপাশের ব্লকের ৬০৭ থেকে ৬০৯ রুম হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস কক্ষের পূর্ব পাশের জানালাগুলো সব ভেঙে যায়। ভাঙা অংশের কিছু কিছু অংশ অফিস কক্ষে প্রবেশ করে। এবং জানালার পাশে থাকা কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন সহ আরো সরঞ্জামাদি কিছুটা ক্ষতিগস্ত হয়েছে। এখনো পুরোপুরি পরিক্ষা নিরিক্ষার করি নি। তবে আপাতত আমাদের ফটোকপির মেশিনটি চালু হচ্ছে না।
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা আরো জানান, মাদারীপুর শহরের শকুনী মৌজার ওপর ১ একর জায়গা নিয়ে জেলার সাড়ে ১৩ লাখ মানুষের জন্য ৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় অত্যাধুনিক সরকারি সমন্বিত অফিস ভবন। ২০১৬ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। গত ৩ আগস্ট ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জেলাভিত্তিক প্রথম সরকারি সমন্বিত অফিসটির উদ্বোধন করেন। কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকায় নভেম্বর মাসে এর নির্মাণকাজ শেষ দেখায় গণপূর্ত বিভাগ। ভবনটি চলবে ৪০টি সরকারী অফিসের কার্যক্রম। ১০ তলা ভবনটিতে ভবনটিতে রয়েছে ৪টি লিফট, মাল্টিপারপাস হলরুম, একসাথে ৫৫টি গাড়ি পার্কিংয়ের আলাদা স্থান, আলাদা বিদ্যুৎ সংযোগ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য যাতায়াতের আলাদা ব্যবস্থাসহ আধুনিক সব সুবিধা।