মাদারীপুরে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও গাছপালা

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে নিয়ম না মেনেই ইট ভাটাগুলোতে কাঠ পুড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি কৌশলে ফসলি জমির মাটি ভাটাগুলোতে ব্যবহার করায় অসহায় কৃষকরা। দীর্ঘদিনেও প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবেশবিদরা। ভাটাগুলোর এমন কার্যক্রম নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নন ইটভাটা মালিকরা। যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, আইন না মানলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।


সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের জাজিরা এলাকায় কয়েকবছর ধরে গড়ে উঠছে মেসার্স বেপারী ব্রিকস্ নামের একটি ইটভাটা। যেখানে জ¦ালানী হিসেবে কয়লার ব্যবহার করার কথা সেখানে ভাটার ভেতর স’মিল বসিয়ে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও গাছপালা। শুধু বেপারী ব্রিকস’ই নয়, এরসাথে জেএসবি, এমএমবি, এমআরকে ব্রিকস্সহ জেলার বেশকিছু ইটভাটায় সরকারি আইনকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে দেদারছে কাঠ পুড়ানো হচ্ছে। এসব অধিকাংশ ইটভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। ঘনবসতির তিন কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ নিষিদ্ধ থাকলেও মানছে না কেউ। ভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা আর হামলার ভয়ে মুখ খুলতে চান না এলাকাবাসী।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, একাধিকবার জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও কোন লাভ নেই। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ইটভাটা চলছে বছরের পর বছর ধরে। প্রশাসন থেকে শুধু আশ^াস’ই পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান করে, পরে আবারও ইটভাটাগুলোতে শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। এতে অনেকেই শ^াসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
মাদারীপুর পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক ড. বশির আহম্মদ বলেন, মূলত ইটভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন তাদের কাছে যেতে চায় না। গেলেও দুই-একটি ছোটখাট অভিযান পরিচালনা করে আর্থিক জরিমানা করে ছেড়ে দেয়। এতে আবারও একই কার্যক্রম করে ইটভাটা মালিকরা। তারা কৌশলে ইটভাটার পাশে থাকা কৃষককের ফসলি জমি ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করে। এক কথায় বলা যায়, কৃষকদের জিম্মি করে ফসলি জমি ব্যবহার করে তারা। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া বেশকিছু ইটভাটায় প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে কাঠ ও গাছপাড়া পোড়ানো হচ্ছে। এইগুলো দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিবেশ হুমকিতে পড়বে।
মাদারীপুরের স্থানীয় পরিবেশভিত্তিক সংগঠন ফ্রেন্ডস অভ নেচার-এর নির্বাহী পরিচালক রাজন মাহমুদ বলেন, মাদারীপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অফিস না থাকায় জেলার ছোটবড় মিলিয়ে অর্ধশত ইটভাটা নিয়ন্ত্রন করে জেলা প্রশাসন। তাদের উচিৎ নিয়ম মেনে ইটভাটা পরিচালনার সুযোগ করে দেয়া। যারা নিয়ম না মানবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর সুযোগ দেয়া হবেনা।