মাদারীপুরে চুরির অভিযোগে স্কুলছাত্র নির্যাতন, ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা প্রভাবশালী মহলের

কালকিনি প্রতিনিধি :
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ডাসারে চুরির অভিযোগে আসিক চৌকিদার-(১৪) নামে এক স্কুলছাত্রকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন সম্ভাব্য ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম ভাষাই ও তার লোকজন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে এ নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য উঠেপরে লেগেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্র জেলার খইয়ারভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র। এদিকে নির্যাতনের ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন সচেতন মহল।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রের পরিবার ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, কালকিনির ডাসার ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম ভাষাইর ভাই কালাই শিকদারের একটি হার্ডওয়ারের দোকান রয়েছে স্থানীয় কোমলাপুর বাজারে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় কালাই শিকদারের দোকানে চুরি সংগঠিত হয়। এ চুরির ঘটনার অভিযোগ এনে একেই এলাকার পুর্বকোমলাপুর গ্রামের হিমজাল চোকিদারের স্কুল পড়ুয়া ছেলে আসিক চৌকিদারকে বৃহস্পতিবার রাতে রেজাউল করিম ভাষাইয়ের নেতৃত্বে কোমলাপুর বাজার থেকে তুলে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় রেজাউল করিম ভাষাই ও তার লোকজন। এসময় রেজাউল করিম ভাষাইয়ের বোনজামাই আবু হাওলাদার, স্ত্রী পারভিন ও এমদাত সরদারসহ ৫/৬ জন মিলে লাঠিয়ে দিয়ে পিটিয়ে স্কুলছাত্র আসিককে গুরুতর আহত করে ফেলে রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ভর্তিতে বাধা প্রদান করে ভাষাই ও তার লোকজন। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় অবশেষে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আসিককে। এদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করছে ওই স্কুল ছাত্রের পরিবারকে। প্রভাবশালীরা বিষয়টি আপস মিমাংসা করার আশ^াস দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন বলে জানান ভূক্তভোগী পরিবার। তবে নির্যাতনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না ওই নির্যাতিত পরিবার।
মানবাধিকার কর্মী মিঠুসহ বেশ কয়েকজন বলেন, একজন স্কুলছাত্রকে চুরির অভিযোগে এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। দেশে আইন আছে তারা ব্যবস্থা নিতে পারতো। আইন নিজের হাতে ভাষাইয়ের এভাবে তুলে নেয়া ঠিক হয়নি। আমরা এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানাই।
স্কুলছাত্রের বাবা হিমজাল চৌকিদার বলেন, আমার ছেলেকে মিথ্যা চুরির অভিযোগে ভাষাই ও তার লোকজন নির্যাতন করেছেন। আমি তাদের বিচার চাই।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম ভাষাই বলেন, চোর মারলে কি হয়। তাই মারা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ডাসার থানার ওসি মুহম্মদ আবদুল ওহাব বলেন, বিষয়টি শুনেছি। যদি পরিবার অভিযোগ করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।