উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যেই কাল কালকিনি পৌরসভার ভোট

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ পুনঃনির্ধারন করা হয়েছে ৩১ মার্চ বুধবার। তবে এবারের নির্বাচন নিয়েও রয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। ভোটার ও প্রার্থীরা চাইছেন, সুষ্ঠ শান্তিপূর্ন নির্বাচনের নিশ্চয়তা। এ ক্ষেত্রে শুধু নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করেই নয়, নির্বাচন কমিশনকে মাঠ পর্যায় ঠিক রাখতে কঠোর হওয়ার দাবী উঠেছে। নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুর ২ টা থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের যাবতীয় মালামাল প্রেরণ করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। দায়িত্ব পালনে প্রস্তুতি নিয়ে স্ব স্ব কেন্দ্রে পৌছেছেন বিজিবি, পুলিশ, আনসার সদস্য, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারা ।
জানা যায়, মাদারীপুরে চারটি পৌরসভার মধ্যে কালকিনি পৌরসভার আয়তন সবচে বেশি। গেলো ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ। দফায় দফায় সংর্ঘষ ও পুলিশ কতৃক স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান সবুজকে তুলে নেয়ার ঘটনাসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ১২ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরে ৩১ মার্চ স্থগিত হওয়া নির্বাচন পুনঃনির্ধারন করা হয়েছে। মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএনপি দলীয় প্রার্থী ইতোমধ্যেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। বাকি প্রার্থীদের প্রচারনায় মুখর ছিল গতকয়েক দিন। দিন-রাত একাকার ছিল প্রার্থীদের প্রচারনা। তবে নির্বাচনে সুষ্ঠ পরিবেশ চায় ভোটাররা।
এব্যাপারে ভুরঘাটা এলাকার ভোটার হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘আমরা এবারও আতঙ্কিত ভোট সঠিকভাবে দিতে পারবো কিনা! যেভাবে প্রাথীর সমর্থকরা উৎশৃঙ্খলতা দেখাচ্ছে। তাতে সঠিকভাবে ভোট দেয়া নিয়ে সংসয় দেখা দিচ্ছে। আমরা চাই, ভোটের দিনে স্বচ্ছ ভাবে ভোট দিতে।’
তবে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন হলেও ভোটের দিনে পরিবেশ নিয়ে শংকিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান সবুজ। তিনি বলেন, ‘নৌকার প্রাথীর লোকজন মঙ্গলবার রাতেও আমার বাড়ীতে বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমি শংকিত ভোটাররা ঠিক মতো ভোট দিতে পারবে কিনা! প্রশাসন যদি ঠিক মতো ভোটের পরিবেশ বর্জায় রাখতে পারে, তাহলে আমার জয় সুনিশ্চত।’
আর সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্যে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এসএম হানিফও নৌকা প্রতীকে ভোট দাবী করেন। তিনি জানান, নৌকা প্রধানমন্ত্রীর প্রতীক, সে আমাকে দিয়েছে উন্নয়নের জন্যে। আর নৌকা জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রীর জয় হবে। সে কারণে এই অঞ্চলের লোকজন নৌকায় ভোট দিবেন। আমরা কারো বাড়ীতে বোমা বা কোন ধরণের অসামাজিক কাজ করি নাই, করবোও না।’
নির্বাচন সুষ্ঠ করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অঙ্গীকারবদ্ধ জানালেন কালকিনির নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ বদরুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠ নির্বাচন পরিচালনার জন্যে সব ধরণের প্রস্তুতি শেষ করেছি। আশা রাখি সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে পুলিশ সুপারের গাড়িতে তুলে ঢাকার নেয়ার ঘটনাসহ নানান কারনে স্থগিত হওয়া কালকিনির নির্বাচনের সাথে এবার নির্বাচন কমিশনের স্বক্ষমতা প্রমান হবে বলে অনেক ভোটারই মনে করেন।
উল্লেখ্য, কালকিনি পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩ হাজার ৪ শত। এর মধ্যে নারী ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৭০০ জন ও পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৩০০ জন। এই পৌরসভার নির্বাচন হবে ইভিএমের মাধ্যমে। মেয়র পদে ৫ জন, সংরক্ষিত মহিলা পদে ১১ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে মাঠে থাকবেন।