নিহত শ্রমিকলীগ নেতা আবু বকরকে সংঘর্ষ থামানোর কথা বলে ফোনে ডেকে নেয় প্রতিপক্ষরাই

শিবচর বার্তা ডেক্স :
রবিবার রাত আনুমানিক দেড়টার দিক পাঁচ্চর সোনার বাংলা মার্কেটের ৫ম তলায় আবু বকরের বাসায় আমি আর আবু বকর এক সাথে ছিলাম। এমন সময় সাড়ে সতের রশি থেকে ইউসুফ সরদার বা তার কোন লোক আবু বকরের মোবাইলে ফোন দিয়ে বলে এখানে তোমাদের ও আমাদের লোকজন সংঘর্ষ করছে। তুমি তারাতারি আসো ওদের সংঘর্ষ থামাতে হবে। তখন আব বকর একাই একটি অটোতে চড়ে সাড়ে সতের রশি যায়। এসময় ইউসুফ সরদার, মনির, ঠান্ডু সরদার, বাবুল শেখসহ ১৫-২০ জন দাড়িয়ে ছিল। এসময় আব বকর অটো থেকে এক পা রাস্তায় ফেলার সাথে সাথে ওরা তার পেটে ধারালো ছুড়ি মারে। আবু বকর এক হাতে পেট চেপে ধরে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে শিবচর থানার ওসি মো: মিরাজুল ইসলামসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছলে ওরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় প্রায় ২ ঘন্টা পর আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আব বকরকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ফরিদপুর হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এভাবেই সেই রাতের ভয়াবহ হামলার বর্ননা করেন নিহত মাদবরচর ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি আবু বকরের সাথে থাকা জসিম মোল্লা। এদিকে বুধবার বাদ আসর নিহত শ্রমিকলীগ নেতা আবু বকরের লাশ জানাজা শেষে নিজ বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহতের ভাই কমরুল দাবী করেন, মঞ্জু মেম্বারের নির্দেশে মনির আমার ভাইকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে মনির নিজেই আমার ভাইয়ের পেটে ছুরি মেরে তাকে হত্যা করেছে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জুন জেলার শিবচর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগের দিন রবিবার মধ্যরাতে মাদবরেরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারন সদস্য প্রার্থী ইউসুফ সরদারের সমর্থকেরা সাড়ে সতের রশি এলাকায় প্রচারে যায়। সেখানে প্রতিপক্ষ সদস্য প্রার্থী আজিজুল সরদারের লোকজন ইউসুফ সরদারের সমর্থকদের বাধা দেয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইউসুফ সরদারের সমর্থকরা আবু বকরকে ছুরিকাঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আবু বকরকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে প্রথমে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়। নিহত আবু বকর ফকির নির্বাচনে বিজয়ী মাদবরচরের ৪ নং ওয়ার্ডের সাধারন সদস্য আজিজুল সরদারের সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এঘটনায় শিবচর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মিরাজ হোসেন , নিহত আবু বকরের পেটে মনির নামের একজন ছুরি মেরেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।